0
বই : বাদশাহ_নামদার
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
পেজ : ২৩১
রিভিউঃ
উপন্যাসে বাদশা নামদার বলতে হুমায়ূন কে বোঝানো হয়েছে। বাদশা হুমায়ূনের নামের সাথে নিজের নামের মিল থাকায় বাল্যকালে কিছু মজাদার সময় কেটেছে যেটা ভূমিকাতেই উল্লেখ আছে।
বাদশা হুমায়ূন সম্পর্কে বলতে গেলে আমি আমার ব্যক্তিগত মত দিব যে একইসঙ্গে তাকে আমার ভাল লাগেছে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার তাকে ভালো লাগেনি। ভাল লাগেনি এ কারনে বলছি তার ক্ষমা করার খুব ভাল একটা স্বভাব আছে। এজন্যই তিনি তেনার ভাইকে বারবার ক্ষমা করেছিলেন। তার ভাইকে ক্ষমা করার কারনে ভাই মুক্ত হয়ে কিছু নিরপরাধ প্রহরী নির্মম ভাবে হত্যা করেন। হুমুয়ূনের এরকম মহানুভবতার কারনে আরো অনেক কেই হত্যা করা হয়েছিল যেটা পরে তিনি জানতে পারেন।
হুমায়ূনকে ভালো লাগার কারন হল তিনি তার কথা রাখতেন এজন্য সামান্য লোক অর্ধদিবসের জন্য সিংহাসনে বসতে পারে। আবার দূর্গ দখল করার পর যখন হুমায়ূনের অজান্তে বন্দি সাড়ে তিনশত মহিলা শিশুদের হাত কেটে নেয়া হয়েছিল জানার পর অনেক কাছের হলেও আদেশদাতার হাত কেটে নেয়ার সিন্ধান্ত নেয়া হয়।
এই হলো সংক্ষিপ্ত হুমায়ূন।আরো অনেক গুনাবলীর কথা বলা হয়েছে। যেমন তিনি ছবি আকতে ভালোবাসতেন আর সবচেয়ে বড় কথা তিনি একজন # বইপোকা ছিলেন। এসব গুন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে।
তবে আমার মনে হয় হুমায়ূন যতবার হেরেছে প্রত্যেক বার তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে বলেই হেরেছে। ভালো মানুষের বেশ ধরে কেউ সেটার সুযোগ নেয় তাহলে আর কিইবা করার থাকতে পারে? একবার হেরে যাবার পর বেচে থাকার জন্য হুমায়ূন নদীতে ঝাপ দেন। সেই ঝাপ দেয়াই হতে পারতো তার জীবনের ইতি, কিন্তু তিনি মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গিয়েও বেচে ছিলেন। কি করে বেচে ছিলেন সেটা আরেক কাহীনি জানতে হলে পড়তে হববে।
তবে যুদ্ধে হারার পর হুমায়ূন কে আটক করা হয়নি আটক করা হয়েছে হুমায়ূনের খুব কাছের একজন বৈরাম খাকে। আদেশ করা হয়েছে বৈরাম খার মাথা কেটে নেওয়া হবে। কিন্তু
বৈরাম খার মাথা কেটে নেয়ার সময় একটা ভেজাল হয়েছে। শের শাহের কেউ জানেনা বৈরাম খা কে। অথচ বন্দি দুজন দাবী করছে তারা দুজনেই বৈরাম খা। দুজনের একজন বৈরাম খা আর অপরজন জানে তার প্রানের বিনিময়েও যদি বৈরাম খাকে বাচানো যায় তাহলে হুমায়ূন অনেক উপকৃত হবে। শেষ পর্যন্ত বৈরাম খা বেচে যান, অন্যকে বাচানোর জন্য এরকম ত্যাগ কি কেউ করতে পারে। যেখানে সে জানে তার মাথা কেটে নেয়া হবে?কাহীনি ফাস করে দিলাম, কিছু মনে করবেন না।
হুমায়ূন পালিয়ে কোনোরকমে বাচতে পারলেও তার মেয়েদের ফেলে যেতে হয়েছিল। আর তার মেয়েদের বাচানোর নামকরে সাথে নিয়ে যায় আচার্য। কিন্তু আচার্য এক নাম্বারের প্রতারক ছিল।
আকিকা এবং অম্বা যে প্রতারনার শিকার হয়েছিল আমার ইচ্ছা করছিল আমি নিজেই সেটার প্রতিশোধ নেই। ধর্মের দোহাই দিয়ে পূন্য লাভের জন্য আচার্য আকিকা এবং অম্বাকে আগুনে পুড়িয়ে মারে। আকিকা হুমায়ূনের মেয়ে অম্বা তার স্বাথী। এই আচার্য হুমায়ূনের বিশ্বাস অর্জন করে রাজ মহলে ঢুকে পড়েছিল। এরজন্য হুমায়ূন কে অনেক খেসারত দিতে হয়েছিল তবে আকিকা এবং অম্বার আত্নাই আচার্য কে শাস্তি দিয়েছিল। সেটা খুব ইন্টারেস্টিং ঘটনা পড়লে জানতে পারবেন।
বৈরাম খা প্রায় সারাটা জীবন হুমায়ূনের সেবা করে এসেছেন। হুমায়ূন সেটা আগে বুঝতে পারেন নি তিনি ভেবেছিলেন বৈরাম খা হুকুমের দাশ। কিন্তু পরবর্তীতে যখন সত্যি বুঝতে পারেন তখন বৈরাম খাকে এমন একটা সম্মান দেন যেটা পড়ে আমার এত ভালো লেগেছিল যেটা বোঝানোর মত নয়।
শেষ করতে চাই কিছু মানুষের কথা দিয়ে, অনেকের কাছে শুনেছি হুমায়ূনের খাবার দেখে তাদের জিহ্বায় পানি আসে। আমার আসেনি তবে এটা ভালো লেগেছে হুমায়ূন একজন #বইপোকা ছিলেন। বইটিতে আরো অনেক খন্ড খন্ড কাহীনি আছে।
আশ্রয় দিয়ে প্রতারনা থেকে শুরু করে ভালবাসার মূল্য হিংসা দিয়ে দেয়া। উপন্যাসে যত খারাপ চরিত্র আছে সবার অধঃপতন হয়েছে কিংবা হুমায়ূন তাদের শাস্তি দিয়েছিল। সবাই মনে করতো নরম মনের কারনে হুমায়ূন কে বারবার রাজ্য হারা হতে হয়েছে।মরুভূমিতে, তুষার রাজ্যে রাত কাটাতে হয়েছে। পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে কতদিন তার শেষ নেই। এই পালিয়ে বেড়াতেই তার ছেলে আকবরের জন্ম হয়।
পারশ্যের রাজা হুমায়ূন কে যে সারপ্রাইজ দিয়েছিল সেটা কখনোই ভোলার নয়। আবার সৈন দ্বারা ঘেরাও তাবুতে যে বন্দি ছিল তাকে দেখে হুমায়ূন যেরকম সারপ্রাইজড হয়েছিল আমি হয়তো ততটা হইনি তবে বেশ অবাক হয়েছিলাম।
আর কিছু বলতে চাইনা তবে হুমায়ূন পুত্র আকবার কেন যে বৈরাম খার সাথে এরকম চরম একটা অন্যায় করেছিল আমি বুঝতে পারছিনা। আকবর বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা কেন তাকে দ্যা গ্রেট বলা হয়েছিল তাও জানিনা তবে যত দিন না জানছি ততদিন আকবারের ওপর আমার ঘৃনা রয়েই যাবে শুধুমাত্র বৈরাম খানের প্রতি নির্মম অত্যাচার করার কারনে।
একটা বিষয় আমি বুঝতে পারছি না, হুমায়ূন যখন রাজ্য বাচানোর চাইতে দয়ামায়া বেশি করতো তখন তার উপর আমার রাগ হতো। আমার মনে হত রাজ্য বাচানোই আগে দরকার। আবার আকবর যখন দয়ামায়া বাদ দিয়ে রাজ্যে বাচালো তখন তাকে অত্যাচারী মনে হল।
পরে বুঝতে পারছি রাজ্যে চালাতে গেলে দয়া মায়া, ভাল বাসা, রাগ, প্রতিহিংসা সব লাগে যেটা হুমায়ূনের ছিল।
উপন্যাসে আরো অনেক চরিত্র আছে যাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা হয়েছে। যেগুলো কখনো আপনার মজার মনে হবে আববার কখনো দুঃখের মনে হবে। উপন্যাসের শুরুতে হুমায়ূনের বাবা বাবরের জীবন সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে। তেনার জীবনেও বিশ্ময়কর অনেক কিছুই ঘটেছে। হুমায়ূন যখন প্রথম মারা যাওয়ার মত অবস্থা ছিল তখন বাবার কি করেছিল এটা আমরা সবাই কবিতায় পড়েছি। পুত্রের প্রতি ভালোবাসা আর কাকে বলে। আর সেই ভালবাসার বাধন ছিন্ন করতে না পেরে হুমায়ূন বাবার প্রতিটি কথাই রেখেছিল। কিন্তু তার ভাইয়েরা পারেনি। তার বিনিময়ে তাদের চরম শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে।
আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
ফরম্যাটঃPDF পিডিএফ
সৌজন্যেঃFree bangla pdf books
‘বাদশাহ নামদার’ আর ডাউনলোড


Meta tag:
বাদশাহ নামদার pdf
download,
humayun ahmed books download,
badsha namdar pdf,বাদশাহ নামদার
ডাউনলোড,
হুমায়ুন
আহমেদের বই ফ্রি ডাউনলোড,
badshah namdar pdf,
humayun ahmed books download,
হুমায়ুন আহমেদ
এর বই ডাউনলোড pdf,Badshah Namdar by Humayun Ahmed | All Bangla Books PDF,ইউরোপের ইতিহাস বই pdf
প্রেমেন্দ্র মিত্রের শ্রেষ্ঠ গল্প pdf
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস pdf
অন্নদাশঙ্কর রায়ের প্রবন্ধ
ভারতবর্ষের ইতিহাস pdf
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাবলী
পথে প্রবাসে pdf
ইসলামের ইতিহাস
বই pdf

Post a Comment

 
Top